ইউক্রেনে সম্প্রতি রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরিমাণ বেড়েছে। প্রায় প্রতিদিনই এ হামলা চলানো হচ্ছে। এর ফলে অনেকটা বিপর্যস্ত ইউক্রেন। রুশ বাহিনীর এসব হামলার প্রধান লক্ষ্যবস্তু জ্বালানি অবকাঠামো।
হামলার জেরে ইউক্রেনের অর্ধেক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র অকোজ হয়ে পড়েছে। এতে করে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ছে ইউক্রেনীয়রা। এমনটা জানিয়েছেন খোদ ইউক্রেনীয় সরকার। খবর আল-জাজিরার।
শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) ইউক্রেনীয় সরকার জানিয়েছে, রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইউক্রেনের প্রায় অর্ধেক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বিকল হয়ে পড়েছে। বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ছে দেশটির জনগণ। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা রাজধানী কিয়েভের।
রাজধানী নিয়ে সতর্ক করে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শীত শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শহরটি পাওয়ার গ্রিড সম্পূর্ণ বন্ধ হতে পারে।
ইউরোপীয় কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ভালদিস ডোমব্রোভস্কিসের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ড্যানিস শিমহাল বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত রাশিয়া ইউক্রেনের বেসামরিক এবং গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের অর্ধেক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বিকল হয়ে পড়েছে। ’
ইউক্রেনের জাতীয় গ্রিড অপারেটর ইউক্রেনারগো বলছে, ১০ অক্টোবর থেকে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোতে ছয়টি বড় আকারের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।
ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার সঙ্গে সংযুক্তকারী কার্চ ব্রিজে হামলার জেরে গোটা ইউক্রেনজুড়ে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বাড়িয়েছে রাশিয়া। ব্রিজে হামলার জন্য কিয়েভকে দায়ী করে আসছে মস্কো। তবে কিয়েভ অভিযোগটি অস্বীকার করছে।
এ দিকে কিয়েভে শীত পড়তে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে গেছে। তুষারপাতও হচ্ছে। এমতাবস্থায় বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল রাখতে কাজ করে যাচ্ছে জেলেনস্কি প্রশাসন।
বিদ্যুৎ ও পানি সংকটের কারণে চলতি শীতে ইউক্রেনে মানবিক বিপর্যয়ের শঙ্কা করেছে জাতিসংঘ।
কিয়েভ শহরের উপপ্রধান মাইকোলা পোভোরোজনিক বলেছেন, ‘আমরা সম্পূর্ণ শাটডাউনসহ বিভিন্ন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। ’
বৃহস্পতিবারের হামলা নিয়ে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের বাহিনী বৃহস্পতিবার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কারখানাসহ শিল্প স্থাপনাগুলোতে হামলা চালিয়েছে। এর জন্য তারা দূরপাল্লার অস্ত্র ব্যবহার করেছে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী। প্রায় ৯ মাস ধরে এ যুদ্ধ চলছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুদ্ধে পিছু হটেছে রুশ বাহিনী। তবে প্রতিদিনই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যাচ্ছে তারা।